শাসকদের সংস্পর্শ : দ্বীন বিকৃতির স্বরূপ
শায়খ আবু দারদা সোয়াতী হাফিজাহুল্লাহ
Original price was: 290 ৳ .130 ৳ Current price is: 130 ৳ .
You save 160 ৳ (55%)বই : শাসকদের সংস্পর্শ : দ্বীন বিকৃতির স্বরূপ
মূল : শায়খ আবু দারদা সোয়াতী হাফিজাহুল্লাহ
অনুবাদ : মুফতি সাঈদ আহমাদ
সম্পাদনা : মুফতি জাকারিয়া
প্রকাশনায় : আল-হিসান
মুদ্রিত মূল্য: ২৯০ টাকা
খেলাফতে উসমানিয়ার পতনের নিদর্শনগুলো যখন প্রকাশ পেতে লাগল এবং এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠলো যে, মুসলমানদের এই নামমাত্র খেলাফত অচিরেই বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। জরাজীর্ণ শক্তি-সামর্থ্য টুকুনও নিস্তেজ হতে চলছে, তখন অনেক পক্ক ঈমানদার আলেম ও বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ নেক বান্দাগণ মুসলমানদের মুক্তি, ইসলামের বিজয় এবং ইসলামী শাসন বাস্তবায়ন তথা দীন প্রতিষ্ঠার লক্ষে বিভিন্ন দল-উপদল ও সংগঠনের গোড়পত্তন করেছিলেন। সেসব দলের মধ্যে দুইটি দল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। এক: তাহরীকে শহীদাইন-সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ ও শাহ ইসমাঈল শহীদ রহ.-এর আজাদী আন্দোলন। দুই: রেশমী রুমাল আন্দোলন।
পরবর্তীতে যখন নামমাত্র খেলাফতের সমাপ্তি ঘটল তখন এই আন্দোলনের হাওয়া মুসলমানদের প্রাণে ঝড় তুলেছিল। ফলে মুসলিম দেশগুলোতে আল্লাহ তাআলার কালিমা বুলন্দ করার জন্য আরো অনেক দল ও আন্দোলনের আবির্ভাব হয়। মুসলমানদের মাঝে দীন প্রতিষ্ঠার প্রেরণা ও উদ্দীপনা বিস্তারে যাদের অবদান অনস্বীকার্য।
আমরা এটা অবশ্যই জানি যে, ইহুদী-খ্রিষ্টান এবং বর্তমান কালের নামধারী মুসলমান তাগুতগোষ্ঠি একমাত্র এসব জাগ্রত মুসলমানদেরকেই নিজেদের মসনদ ও ভোগবিলাসের শত্রু মনে করে। তাই তাদেরকে নিঃশেষ করার জন্য নানান পাঁয়তারা করে থাকে।
তাদের প্রথম মিশন হল, এসব দল-উপদল যেন প্রতিষ্ঠাই হতে না পারে। আর যদি প্রতিষ্ঠা হয়েই যায় তাহলে তাদেরকে যথাসাধ্য সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করার সবরকম চেষ্টাই তারা করে ।
এসব তাগুত শাসকরা তাদের এই মিশন বাস্তবায়নের কাজে নিবিড় সহযোগিতার জন্য দীন বিক্রেতা লেবাসধারী মোল্লা ও পশ্চিমা চিন্তা-চেতনাধারী কিছু গবেষক ও স্কলারদের বেছে নেয়। তারা আন্দোলনরত অনেক বড় বড় দলকে তাদের সূক্ষ্ম মিশনের ফাঁদে ফেলে গোমরাহী ও ভ্রষ্টতার পথে পরিচালিত করে। এসব দিন বিক্রেতা মোল্লা ও স্কলারদের আমরা ‘পথভ্রষ্টকারী নেতৃবৃন্দ’ বলে সম্বোধন করে থাকি।
হাদীসের ভাষ্য থেকে এটাই স্পষ্ট হয় যে, দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্বে একটা সময় এমন আসবে-যখন এমন অনেক মোল্লা ও স্কলারদের ছড়াছড়ি হবে-যাদের ফেতনা দাজ্জালের ফেতনার চেয়েও ধ্বংসাত্মক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের এই ফেতনার পূর্বাভাস দিয়ে বলেছেন,
وإن مما أتخوف على أمتي أئمة مضلين
‘আমি আমার উম্মতের জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি ভয় করি সেটা হলো পথভ্রষ্ট নেতৃবৃন্দ।’
অন্য হাদীসে আছে,
أي شيء أخوف على أمتك من الدجال؟ قال: “الأئمة المضلين
(রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো) ‘আপনি আপনার উম্মতের জন্য কোন বিষয়টিকে দাজ্জালের চেয়েও বেশি ভয় করেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, পথভ্রষ্ট নেতৃবৃন্দদেরকে।’
এটা আমাদের সামনে স্পষ্ট থাকা চাই; বিশেষ করে সাধারণ জনতার এটা আত্মস্থ করে রাখা চাই যে, ‘পথভ্রষ্টকারী নেতৃবৃন্দ’ বলতে আমরা এখানে তাদেরকেই উদ্দেশ্য করছি না-যারা স্পষ্টভাবে ইসলামের বিপরীতে অবস্থান নিচ্ছে এবং ইসলামী শাসন বাস্তবায়নে সরাসরি মোকাবেলায় অবতরণ করছে। কারণ তাদের সাথে ইসলামের শত্রুতা জনসাধরণের কাছে অস্পষ্ট নয়। তাদের পাতা ফাঁদে মুসলমানরা কমই পা দিয়ে থাকে। বরং আমরা এখানে সেসব স্কলার, গবেষক, বুদ্ধিজীবি ও আম্বিয়ায়ে কেরামের ওয়ারিশ হওয়ার দাবিদারদের উদ্দেশ্য করবো-যারা বাহ্যত কোরআন-হাদীসের সাথে সম্পর্ক রাখে এবং দীনের একনিষ্ঠ খাদেম ও রক্ষক হওয়ার দাবি করে; কিন্তু শরীয়তের যেসব বিষয়ের সাথে উম্মতের জীবন-মরণ, অস্তিত্ব-ধ্বংস ও উন্নতি-অবনতির সম্পর্ক এবং কোরআন হাদীসে যেগুলো দিবালোকের ন্যয় স্পষ্ট করে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে-সেসব বিষয়ে তারা ‘নিজেরা পরিবর্তন হবে না কোরআনকে পরিবর্তিত করতে হলেও’ এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় । তাদের আচরণ আর ইহুদীদের আচরণের মধ্যে ব্যবধান নেই। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,
يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِ
‘তারা কালামকে তার স্থান থেকে বিচ্যুত করে।’
তাদের এসব কুকর্মের উদ্দেশ্য একটাই, দুনিয়ার কিছু ভোগ-বিলাস ও নিজেদের মসনদ টিকয়ে রাখার জন্য এসব মুসলিম নামধারী শাসকদের শাসনকে বৈধ সাব্যস্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা-যারা আল্লাহ তাআলার বিধান ব্যতীত ভিন্ন কোন বিধানে বিচার ফয়সালা করছে। যে শাসকদের ইসলাম ও মুসলমানের সাথে শত্রুতা এবং ইহুদী-খ্রিষ্টানদের সাথে বন্ধুত্ব কারো কাছে অস্পষ্ট নয়।
Out of stock
Reviews
There are no reviews yet.