তরুন! তুমি পূর্বাহ্নের জ্বলন্ত সূর্য। তোমার দেহের প্রতিটি কোষে আছে প্রদীপ্ত পৌরুষ। উগ্র যার প্রকৃতি, শিকল ভাঙ্গা যার স্বভাব। তুমি যাকে সংযত রাখছো দিনের পর দিন। রোধ করে যাচ্ছো তার গতি তোমার বিবেক দিয়ে, দ্বীন ও শরীয়তের দুর্লঙ্ঘ প্রাচীর দিয়ে।
তুমি বসে আছো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নামের অশ্লীলতার আখড়ায়। যেখানে বাদক বাজাচ্ছে বাদ্য, গায়ক ধরেছে গান, নর্তকী নাড়াচ্ছে তার দেহ। দৃশ্যমান হচ্ছে তার অঙ্গগুলো, যা ছিলো তার সতর – অবশ্যআবরণীয়। সুরের প্রতিটি ঝংকার যেন বারুদ হয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে তোমার উষ্ণপৌরুষে। অসম্ভব নয় যে সেখানে ঘটে যাবে কোন বিস্ফোরণ। তা জ্বলে উঠবে দাউ – দাউ করে। বেরিয়ে আসবে গলিত লাভার মত। জ্বলে – পুড়ে খাক হবে তোমার সংযত চরিত্র, ধুলোয় মিশে যাবে তোমার উঁচু ব্যক্তিত্ব। তোমার পরিবেশে নেমে আসবে চরম দুর্যোগ, দুর্বিপাক। আহত হবে আরো মানুষের সুরক্ষিত সম্ভ্রম।
হে তরুন! তুমি তোমার মায়ের কষ্টের ধন। তোমার অস্তিত্ত্বের প্রতিটি অণু – পরমাণুতে মিশে আছে তার কষ্ট। তিনিই তো কষ্ট করে তোমাকে গর্ভে ধরেছিলেন। তোমাকে যুগিয়েছিলেন অস্তিত্ত্বের উপাদান – নিজ সত্ত্বার গহীন উৎস থেকে। তুমি গড়ে উঠেছো সেখানে তিলে – তিলে, মানুষের রূপ নিয়ে। সে যে কী কষ্ট তিনি সয়েছেন স্বানন্দে – স্বাচ্ছন্দে। তা অনুমান করার কল্পনাশক্তিও তোমার নেই, নেই তা ব্যক্ত করার কোন ভাষাও।
পৃথিবীতে তুমি এসেছিলে একটি নরম তুলতুলে দেহ নিয়ে। তাতে কোন শক্তি ছিলনা। ছিলনা কোন কষ্ট সহিষ্ণুতা। অনুভুতি তোমার ছিল, ক্ষুৎপিপাসাও ছিল। ছিলনা তা বর্ণনা করার ভাষা, ছিলনা তা নিবারণের সামর্থ। মায়ের ছিলো এক সহজাত প্রতিভা যাতে তিনি বুঝে নিতেন তোমার সমস্ত অব্যক্ত অনুভুতি এবং যন্ত্রণা। তিনিই তো তোমার মুখে আহার যোগাতেন অকৃপণ মনে। সে আহার যে ছিলো তারই দেহ নিঃসৃত। তিনিই তো কষ্ট পেতেন তোমার কষ্টে। দুঃখ পেতেন তোমার যন্ত্রণায়। তিনি সদা সচেষ্ট থাকতেন – তোমর নরম দেহে যেন কোন কষ্ট না আসে, তোমার কচি মনে যেন না লাগে কোন দুখের পরশ। সে জন্য প্রয়োজনে আগাম ব্যবস্থা তিনিই করে রাখতেন
তরুণ! তুমি তোমার বাবার স্বপ্ন। তার চোখের শীতলতা। তোমাকে লালন করার প্রতিটি মুহূর্তে, প্রতিটি পর্যায়ে মায়ের সাথে তিনিই তো শরীক ছিলেন। তার সহযোগিতা এবং অনুদানে তুমি বড় হয়েছ, হচ্ছ অদ্যাবধি। তোমাকে বড় করতে তার কত যে কষ্ট। সারাবেলা তিনি খাটেন হাড়ভাঙা খাটুনি। বেলা শেষে ঘরে ফেরেন ক্লান্ত দেহে, অবসন্ন মনে। তোমার দর্শনে তিনি ফিরে পান শক্তি, মানসিক স্বস্তি। ভুলে যান সারাদিনের সব কষ্ট – ক্লেশ।
বাবা – মা’র সাথে রূঢ় আচরণ, তাদের প্রতি কর্কষ বাক্যবাণ, এই কী তোমার পক্ষ হতে তাদের দান – অনুদানের বদলা!
Reviews
There are no reviews yet.