তারুণ্য। শিহরণজাগানিয়া একটি শব্দ। এ শব্দটা দেখলেই মনে হয়- সজীব পেলবতায় মাখা। তাই সদা তারুণ্যের জয়গান। তারুণ্যের দ্বারা হয় না এমন কাজ নেই। তাই এখন তারুণ্যের সময়। প্রতিটি প্রাইভেট সেক্টর থেকে শুরু করে যে কোনো সেক্টরে আগে বেছে নেয় তরুণদের। কারণ, তরুণদের দ্বারা সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব। ইতিহাসে যতো মহান কাজ হয়েছে- তার সবগুলোই যুবসমাজের হাত ধরে হয়েছে। প্রতিটি উত্থানের নেপথ্যে যুবসমাজের অনস্বীকার্য অবদান ইতিহাসের পাঠকমাত্র জানেন।
কিন্তু আফসোস! সেই মুসলিম যুবসমাজ আজ: নিজেদের পরিচয় ভুলতে বসেছে। ভুলতে বসেছে নিজেদের ইতিহাস। আজ তারা নানা সমস্যায় জর্জরিত। তাদের সমস্যাগুলো কী কী? তা থেকে উত্তরণের উপায় কী? সে বিষয়গুলোই ড. সালমান বিন ফাহাদ আল-আওদাহ তুলে ধরেছেন বেশ ঋজু বর্ণনাভঙ্গিতে। প্রাঞ্জল ভাষায়। তাঁর শব্দ যেমন সুচয়িত গাঁথুনি তেমন মজবুত। তাঁর আলোচনার ঢং অনেকটা তাবলীগ জামাতের ‘খুসূসী গাশত’-এর মতো।
একজন দরদী অভিভাবকের সুুরেই তিনি জাগাতে চেষ্টা করেছেন টিনএজারদের। বইটির বিষয়বস্তু তো আমাদের কাছে স্পষ্ট। আমি বরং ড. সালমানের কিঞ্চিত পরিচয় তুলে ধরবো পাঠকের সামনে। ড. সালমান আল আওদাহ ১৯৫৫ সালে সৌদি আরবের বুরাইদা শহরের নিকটবরতী আল-বাসর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি রিয়াদের ইমাম মুহাম্মদ বিন সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যারাবিক ল্যাংগুয়েজ ফ্যাকাল্টিতে ভর্তি হন। দুই বছর পড়াশোনার পর তিনি ভর্তি হন শরীয়াহ ফ্যাকাল্টিতে। এখান থেকে ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি আল-কাসিমে ফিরে যান এবং বুরাইদার একাডেমিক ইনস্টিটিউটে অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি ইমাম মুহাম্মদ বিন সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীয়াহ ও উসূলুদ্দীনের ফ্যাকাল্টিতে ভর্তি হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি লেকচারারের দায়িত্বও পালন করেন। তিনি শাইখ আব্দুল অযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবনে বায, শাইখ মুহাম্মদ ইবনে উসাইমীন, আব্দুল্লাহ আব্দুল রহমান জিবরীন প্রমুখ শাইখের অধীনে অধ্যয়ন করেন। ২০০৩ সালে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পঞ্চাশ এর অধিক বই লিখেছেন। ‘ইসলাম টুডে’র আরবী সংস্করণ পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
যাই হোক- এমন এক মহান দায়ী আলেমের লেখনীর ভাব-ধার ও উপমার সরল সাযুজ্যভরা গল্পের স্বাদের মনোহর কথা কি অনুবাদে যথাযথ তুলে ধরা যায়? তারপরও চেষ্টা করেছি অনুবাদ যথাসাধ্য সাবলীল ও সরল রাখার।