ইমাম নববি রহঃ বলেন,
“অনেকেই বলেন যে, ‘ দ্বীন বিনষ্টে, ব্যক্তিত্ব খর্বে, ঈমানের স্বাদ বরবাদে এবং অন্তরকে ব্যতিবস্ত করে তুলতে ঝগড়া বিবাদের চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না। কেউ যদি আপত্তি করে যে, অধিকার রক্ষায় বা আদায়ে বিরোধ-বিবাদের বিকল্প নেই। তার জবাবে তাই বলা যায় যা ইমাম গাজালী রহঃ বলেছেন। তিনি বলেন যে, ‘নিশ্চয়ই অন্যায়ের পক্ষে এবং জ্ঞানশূন্য ঝগড়া, বিবাদ ও বিরোধীতা অত্যন্ত নিন্দনীয়’। যেমন বিচার কার্যে কোন কোন উকিল কোন পক্ষ সত্যের উপর রয়েছে তা না জেনেই বিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
এধরনের নিন্দনীয় কর্মকান্ডের অন্যতম আরেকটি হল ‘ বাদী তার বিবাদকে শুধুমাত্র অধিকার আদায়ে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রতিপক্ষের উপর কর্তৃত্ব জাহির ও তাকে কষ্ট দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে অমূলক মিথ্যা ও তীব্র বিবাদের পথ বেছে নেয়। (যেমন মামলা দীর্ঘায়িত করা, কিছু মিথ্যা মামলা ঠুকে দেওয়া ইত্যাদি।)
–
এমনিভাবে অধিকার আদায়ের সাথে সংশ্লিষ্টতা বহির্ভুত কথাবার্তা দ্বারা প্রতিপক্ষকে কষ্ট দেওয়া এবং শুধুমাত্র জেদের বশবর্তী হয়ে কঠোর ভাষায় প্রতিপক্ষকে তুলোধুনো করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
তবে কোন নিপীড়িত বা অধিকার বঞ্চিত ব্যক্তি যদি তার শরীয়ত সম্মত অধিকার আদায়ে কোন রূপ কঠোরতা, অতিরঞ্জন, একগুঁয়েমি ও কষ্টদানের পথ অবলম্বন না করে সত্যের উপর অটল থেকে বিবাদে জড়ায়। তাহলে তা হারাম হবে না। তদুপরি বিকল্প কোন পথ খোলা থাকলে বিবাদের পথ ত্যাগ করাই শ্রেয়। কেননা ঝগড়া বিবাদের সময় জিহ্বাকে সংযত রাখা নিতান্তই দুঃসাধ্য ব্যাপার।
–
ঝগড়া বিবাদ অন্তরে জ্বালা সৃষ্টি করে এবং ক্রোধ উস্কে দেয়। আর যখন ক্রোধ বৃদ্ধি পায় তখন উভয়ের মাঝে প্রতিহিংসার সূত্রপাত হয়। এতে করে একে অন্যের দুঃখে খুশী এবং সুখে দুঃখী হয়। আর জিহবা তা প্রকাশে ব্যগ্র হয়ে উঠে। মোটকথা হল যেই ঝগড়া বিবাদে জড়াবে সে এসকল বিপদে নিপতিত হবে। অন্তত তার অন্তর এতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়বে। এমনকি নামাজের মধ্যেও সে এই ঝগড়া বিবাদ ও এর পক্ষে বিপক্ষের যুক্তি ইত্যাদিতে মনযোগী হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দেয়। তখন আর তার মধ্যে কোনরূপ স্থিরতা থাকে না।
Reviews
There are no reviews yet.