মুমিনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার নামায
মুসলিম ইতিহাসের বিখ্যাত সেনাপতি কুতাইবা ইবনে মুসলিমের সেনাদলের সাথে হযরত মুহাম্মাদ ইবনে ওয়াসেও জিহাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন। শত্রু সৈন্যদলের মুখোমুখী হলে কুতাইবা লক্ষ্য করলেন, মুহাম্মাদ ময়দানে নেই। তিনি কয়েকজনকে তাঁকে খুঁজতে পাঠালেন। ফিরে এসে তারা জানাল, আমরা তাকে নামাযে সিজদাবস্থায় পেয়েছি। নামায শেষে হাত উঠিয়ে দুআ করতে দেখেছি। কুতাইবা বললেন, আল্লাহর কসম! মুহাম্মাদ ইবনে ওয়াসের দুআর হাত আমার কাছে হাজারো দুঃসাহসী যুবক ও জানবাজ মুজাহিদের জিহাদের চেয়ে প্রিয়। মুহাম্মাদ বিন ওয়াসে জিহাদের ময়দানে ফিরে এলে কুতাইবা জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় ছিলে? তিনি উত্তর দিলেন, তোমার জন্য আকাশের দুয়ারে আলোড়ন সৃষ্টি করছিলাম।
এই নামাযের দাসত্ব ছেড়ে আজ কোথায় রোগীরা? এই রুকু ও সিজদা ফেলে কোথায় বিপদগ্রস্থরা? মাজলুম ও অভাবীরা কেন আজ নামায ছেড়ে দিল? নামাযের দ্বারাই তো রোগী রোগমুক্তি লাভ করবে। এর দ্বারাই বিপদগ্রস্তের আপদ দূর হবে। গোনাহগারের গোনাহ মাফ হবে। তওবাকারীর তওবা কবুল হবে। কাজেই নামাযের মাধ্যমে আকাশের দুয়ার কাঁপিয়ে তুলুন। বিপদ থেকে নিরাপদ ও কষ্ট থেকে দূরে থাকুন।
বান্দার নামাযে আল্লাহর আনন্দ
তারা যখন আল্লাহু আকবার বলেন তাদের দিলে তখন এই অনুভূতি থাকে যে, আমার আল্লাহ সবার চেয়ে মহান। যা কিছু কল্পনায় আসতে পারে সব কিছুর উর্ধ্বে তাঁর স্থান। সেই মহান সত্তা আমার নামায দেখছেন। আমার মুনাজাত শুনছেন।
বান্দা যখন বলে, الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। সে যখন বলে, الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণগান গেয়েছে। সে যখন বলে, مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমাকে মহিমান্বিত করেছে। সে যখন বলে, إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার বান্দার জন্য। সে যা চাইবে, তাই দেব।
আল্লাহ তাআলা যখন তাঁর বান্দাকে আমার বান্দা, আমার বান্দা বলে উল্লেখ করেন তখন যে বান্দার হৃদয়ে সামান্য অনুভূতিও রয়েছে তাঁর হৃদয়ে কত আনন্দ, কত যে স্বাদ অনুভব হয়! আরশের অধিপতি, নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী রাজাধিরাজ তাকে নিজের বান্দা বলে সম্বোধন করছেন! যিনি দুঃখীজনের সাহায্য করেন। নিরুপায়ের ডাকে সাড়া দেন। তাঁর সকাশে বান্দার কলব তখন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এমন ভাবনায় মুমিনের হৃদয়ে প্রশান্তি নেমে আসে। তার দেহের নড়াচড়া ধীর হয়ে যায়। তার সব ভাবনা আল্লাহর মাঝে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তার দৃষ্টি মাওলার দিদারে স্থির হয়ে যায়। তাঁর সান্নিধ্যের স্বাদ সে অনুভব করতে থাকে। হৃদয়ে অনুতাপের অব্যক্ত স্বাদ সে আস্বাদন করতে থাকে।
ফলে তার ইবাদত এমন হয় যেন সে আরশে সমাসীন, আসমানের উপরের আল্লাহকে স্বচক্ষে সে দেখতে পাচ্ছে। তখন তাঁর আদেশ-নিষেধ সম্বলিত আয়াতগুলো সে বলতে থাকে আর সে আদেশ বাস্তবায়ন করতে থাকে। একে একে আল্লাহর বিধানগুলো যেন তার চোখের সামনে স্পষ্ট হতে থাকে। বান্দার অনুনয় আর আহাজারী তখন আকাশে সেই মহামহিমের দুয়ারে পৌঁছে যায়, যিনি চিরঞ্জীব, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। যিনি ভালবাসেন। রাগ করেন। সন্তোষ প্রকাশ করেন। শাস্তিও দেন। যা ইচ্ছা করেন। যা চান ফয়সালা দেন। ঘোষিত হয়েছে-
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ.
অর্থাৎ তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহকে সিজদা করে যা কিছু আছে আকাশম-লীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজী, পর্বতমালা, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে? আর অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি; আল্লাহ যাকে হেয় করেন তার সম্মানদাতা কেউ নেই; আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন। [সূরা হজ্ব: ১৮] অনুনয় আর আহাজারী তখন আকাশে সেই মহামহিমের দুয়ারে পৌঁছে যায়, যিনি চিরঞ্জীব, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। যিনি ভালবাসেন। রাগ করেন। সন্তোষ প্রকাশ করেন। শাস্তিও দেন। যা ইচ্ছা করেন। যা চান ফয়সালা দেন। ঘোষিত হয়েছে-
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ.
অর্থাৎ তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহকে সিজদা করে যা কিছু আছে আকাশম-লীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজী, পর্বতমালা, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে? আর অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি; আল্লাহ যাকে হেয় করেন তার সম্মানদাতা কেউ নেই; আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন। [সূরা হজ্ব: ১৮]
Reviews
There are no reviews yet.