নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে আমরা ভালোবাসি। নিজেদের তাঁর উম্মত দাবি করি। কিন্তু তাঁর সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? যদি আমাদের তাঁর সম্পর্কে আলোচনা করতে বলা হয়, তখন কি আমরা তাঁর সম্পর্কে অনর্গল বলে যেতে পারব? কত গল্প-উপন্যাসই তো আমরা অধ্যয়ন করি, বিশ্বের নানা প্রান্তের কত অদ্ভুত খবরের পেছনে পড়ি! কিন্তু সত্যিকারই বলুন তো, প্রিয় নবীজির জীবনী কিংবা তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি সম্পর্কে জানার এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণের কতটুকু আগ্রহ আছে আমাদের মাঝে? শুধু ভালোবাসার দাবি করলেই কি ভালোবাসা হয়। ভালোবাসার জন্য তো প্রিয় মানুষটি সম্পর্কে জানার পূর্ণ আগ্রহ থাকতে হয়। হ্যাঁ, প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুণাবলি সম্পর্কে জানতে পড়ুন অনবদ্য এ বইটি…
নবীজির উত্তম গুণাবলি বইটির ফ্রি পিডিএফ অফিসিয়ালি অনুমোদিত নয়।
নবীজির উত্তম গুণাবলি বইটি পড়ে রিভিউ সেকশনে রিভিউ দিয়ে অপরকে উৎসাহিত করুন।
lubaba –
একবারের ঘটনা: তিনি এক সফরে ছিলেন। সঙ্গীদেরকে তিনি একটি বকরি প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলেন। তাঁদের মধ্য থেকে একজন বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি তা জবাই করব। আরেকজন বললেন, আমি এর চামড়া ছিলে দেবো। আরেকজন বললেন, আমি তা পাকাব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, পাক করার জন্য আমি লাকড়ি সংগ্রহ করে দেবো। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরাই তো কাজে আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট। উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি জানি তোমরা আমার পক্ষ থেকে যথেষ্ট, তবে আমি বিশেষ অবস্থানে থাকতে অপছন্দ করি। কেননা, আল্লাহ তাআলা কোনো বান্দাকে তাঁর সাথীদের মাঝে বিশেষ অবস্থানে দেখতে অপছন্দ করেন। এরপর তিনি উঠে গিয়ে লাকড়ি সংগ্রহ করে এনে দিলেন।
–
sanjida –
একবার তিনি সফরে ছিলেন। নামাজের সময় হয়ে গেলে তিনি নামাজের স্থানে আগমন করলেন। কিন্তু একটু পরই তিনি সেখান থেকে আবার ফিরে গেলেন। লোকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনি কোথায় যাচ্ছেন? উত্তরে তিনি বললেন, আমি আমার উটনীটি বেঁধে আসছি। উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম বললেন, এটা তো আমরাই বাঁধতে পারি। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যেন অন্য লোকের সাহায্য না নেয়; যদিও তা মিসওয়াক চাবানোর মতো সামান্য বিষয়েই হোক না কেন।
.
তিনি প্রতিটি উঠা-বসায় আল্লাহ তাআলার যিকির করতেন। কোনো মজলিসে উপস্থিত হলে যেখানে জায়গা পেতেন সেখানেই তিনি বসে যেতেন। অন্যদেরকেও তিনি এ নিয়ম মেনে চলতে নির্দেশ দিতেন। কোনো কিছু বন্টন করলে মজলিসে উপস্থিত সকলের মাঝে সমভাবে বন্টন করতেন এবং উপস্থিত সকলকে তিনি সমান সম্মান করতেন। তাঁর মজলিসে কেউ একথা মনে করতে পারত না যে, অমুক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট আমার চেয়ে বেশি সম্মানিত এবং অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর নিকট কেউ বসলে লোকটি উঠে যাওয়া পর্যন্ত তিনি উঠতেন না, তবে তাঁর কোনো ব্যস্ততা থাকলে অনুমতিসাপেক্ষে তিনি সেখান থেকে উঠে যেতেন। বিনিময় হিসেবে তিনি কাউকে এমন কিছু প্রদান করতেন না, যা গ্রহীতা অপছন্দ করে। মন্দের বিনিময় তিনি মন্দের দ্বারা দিতেন না; বরং ক্ষমা করে দিতেন।
.
তিনি অসুস্থদের সেবা করতেন, মিসকীনদের ভালোবাসতেন, তাদের সাথে বসতেন এবং তাদের জানাযায় অংশগ্রহণ করতেন। তিনি কোনো ফকীরকে দারিদ্রতার কারণে তুচ্ছ জ্ঞান করতেন না এবং কোনো বাদশাহকে তার বাদশাহির কারণে তোয়াক্কা করে চলতেন না। নেয়ামত যত ছোটই হোক না কেন, তিনি এর যথাযথ মূল্যায়ন করতেন, একে তুচ্ছ জ্ঞান করতেন না। খাবারের দোষ তিনি কখনোই বর্ননা করতেন না। ভালো লাগলে খেতেন, না হয় রেখে দিতেন। তিনি প্রতিবেশীদের হক সংরক্ষণ করতেন এবং মেহমানকে সম্মান করতেন। তিনি ছিলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল।