শীতকালীন দীর্ঘ রাত। আধারের দেয়াল টপকে তুহিনস্লাত কনকনে শীত শরীরের জোড়াগুলো ছিন্ন করে দিচ্ছে।
হেরাত থেকে নিশাপুর অভিমুখী সুদীর্ঘ রাজপথটি যুগ যুগ ধরে রহস্যপূর্ণ গভীর জনহীন অন্ধকারে মূক হয়ে পড়ে আছে। চারদিকে গা-ছমছম নীরবতা । পাহাড়ি এই রাস্তাটির দুই ধারে চোখজুড়ানো চারাগাছ। কোথাও কোথাও কাটাযুক্ত ঝোপঝাড়ও রয়েছে।
হঠাৎ সেই বিজন পাহাড়ি অঞ্চলটি একাধিক ঘোড়ার খুরধবনিতে মুখরিত হয়ে উঠল। দেখতে না দেখতেই তিনজন অশ্বারোহী দ্রুতগতিতে ঘোড়া হাঁকিয়ে এগিয়ে এসেছে।
লোকগুলো ছুটে চলছে নিশাপুরের দিকে ৷
হাঁপিয়ে ওঠা ময়দান নীরবতার আরবি চাদর মুড়ি দিয়ে আবৃত হয়ে আছে। চঞ্চল অশ্বের দ্রুতগতি তার প্রতিটি খুরের দাগ বসিয়ে দিয়ে সামনে এগোচ্ছে । গোটা ময়দান পাহাড়ি হিম নিঃশ্বাসে গুটি মেরে বসে আছে। নিশিভীরুতা যেন তাকে চিমটে ধরে রাখছে এদিকে অশ্বারোহীরা স্বীয় গন্তব্যে প্রাণপণে ছুটে চলছে। ছুটতে ছুটতে তারা নদীর তীরবর্তী হলো । এবার তারা পাহাড়ি নদীর পারে এসে থেমে গেল । তল্মধ্যে একজন পুবাকাশে লক্ষ করল । সাথিদের উদ্দেশ করে বলে উঠল, বন্ধুরা, ফজরের সময় হয়ে গেছে । এসো, সবাই নামাজ আদায় করে নিই, তারপর গন্তব্যের দিকে এগোতে থাকি ।
তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ঘোড়া থেকে নেমে পড়ল এবং ঘোড়াগুলোকে পাথরের সঙ্গে বেঁধে নিল । তারপর নদীর কিনারে বসে অজু করতে শুরু করল। পুবাকাশে সোবহে সাদেকের সাদা রেখা উকি দিয়ে রাতকে বিদায়ের বারতা জানিয়ে দিল। পাহাড়ি এলাকা আলবারজ থেকে উত্তর-পশ্চিমে অন্ধ হাওয়া পাগলপারা হয়ে উঠল প্রায়, যার দরুন ঠাণ্ডার প্রকোপ অধিক হারে বৃদ্ধি পেতে লাগল।
তিন আরোহী অজু শেষ করে নিজ নিজ ঘোড়ার বাধন খুলে দিল । অতঃপর পাহাড়ি উপত্যকায় আরোহণ করল । ঘোড়াগুলোর লাগাম খুলে দিয়ে স্বাধীনভাবে বিচরণ করার সুযোগ করে দিল তারা । অতঃপর ফজর নামাজের উৎসাহদাতা…..
Reviews
There are no reviews yet.