উচ্চ মনোবল – পৌঁছে দেয় সাফল্যের শিখরে
মানুষে মানুষে হিম্মতের পার্থক্য হয়, এমনকি প্রাণীতেও একেক প্রাণীর হিম্মত একেক পর্যায়ের। মাকড়সা জন্মের পর থেকেই নিজের জাল নিজে বোনা শুরু করে। মায়ের অনুগ্রহ গ্রহণ করে না। সাপ অন্যের তৈরি করা গর্ত খুঁজে বেড়ায়। কারণ, তার স্বভাবে রয়েছে জুলুম। কাক খোঁজে মৃত প্রাণী। বাজপাখি শুধু জীবিতদের ওপরই হামলা করে। সিংহ বাসি খাবার খায় না। হাতি খাবার পাওয়ার আগ পর্যন্ত চাটুকারিতা করতে থাকে। আর গোবরেপোকা বিতাড়িত হয়েও ফিরে আসে।
মুতালম্মিস বলেন :
إِنَّ الْهَوَانَ حِمَارُ الْبَيْتِ يَأْلَفُهُ *** وَالْحُرُّ يُنْكِرُهُ وَالْفِيْلُ وَالْأَسَدُ
ولا يُقِيمُ بِدَارِ الذُّلِّ يَأْلَفُهَا *** إِلَّا الذَّلِيْلَانِ عَيْرُ الْحَيِّ وَالْوَتَدُ
هَذَا عَلَى الْخَسْفِ مَرْبُوْطٌ بِرُمَّتِهِ *** وَذَا يُشَجُّ فَمَا يَأْوِيْ لَهُ أَحَدٌ
‘গাধাই কেবল ভালোবাসতে পারে লাঞ্ছনা। (যত অপমানই আসুক, সে ঘরে লেপ্টে থাকে। কারণ, এখানে আরামসে দুবেলা খেতে পায় সে।) কিন্তু স্বাধীনচেতা হাতি আর সিংহ মাত্রই লাঞ্ছনাকে ঘৃণা করে। লাঞ্ছনার ঘরকে ভালোবেসে কেউ সেখানে নিজের আবাস গড়ে না—কেবল গাধা আর তাঁবুর খুঁটি ছাড়া। একটা বাঁধা থাকে অপমানের রশিতে। আরেকটার মাথা ফাটিয়ে পুঁতে রাখা হয় মাটিতে—তাদের প্রতি কারও করুণাও হয় না কখনো।’
নবজীবনের সন্ধানে
‘নবজীবনের সন্ধানে’ আপনাকে নিজের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। নিজেকে নিয়ে ভাবার একটু সুযোগ করে দেবে। শাইখ মুহাম্মাদ আল-গাজালি তার এই গ্রন্থকে জীবনের নির্যাস দিয়ে সাজিয়েছেন। উন্মুক্ত ও উদার একটি দৃষ্টিকোণ থেকে কথা বলেছেন। বিশেষত বর্তমান সময়ের হতাশগ্রস্ত তরুণদেরকে উজ্জীবিত করতে চেষ্টা করেছেন। উপস্থাপনার ক্ষেত্রে শাইখের নিজস্ব একটি ধারা রয়েছে। তিনি সময়ের ভাষা বোঝার চেষ্টা করেন। নতুন প্রজন্মের সামনে তাদের ভাষায় ইসলামকে উপস্থাপন করেন। তাই তার লিখিত গ্রন্থগুলো আরব বিশ্বে পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষস্থান দখল করে আছে। বাংলা ভাষায় অনূদিত গ্রন্থের সংখ্যা খুবই সামান্য। সেই প্রয়োজনবোধ থেকে আমরা তার ‘জাদদিদ হায়াতাকা’ নামক গ্রন্থটি বাংলা ভাষাভাষীদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। ‘নবজীবনের সন্ধানে’ গ্রন্থটি সেই চেষ্টারই ফসল।
টাইম ম্যানেজমেন্ট
একেকজন সাহাবি বিশ-পঁচিশ-ত্রিশ কিংবা অনেকে তার চেয়েও বেশি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এক জীবনে। জি না, তারা চিরকুমার ছিলেন না; বরং প্রায় সকলেরই একাধিক স্ত্রী ছিল এবং সে স্ত্রীরা তাদের স্বামীর ওপর সন্তুষ্টও ছিলেন। তাদের ঘরভর্তি সন্তান-সন্তুতিও ছিল। সবই তারা সামলেছেন। আবার ফজরের সময় আল্লাহর রসুল যখন জিজ্ঞেস করেছেন, কে আজ সাদাকা করেছো? কে আজ রুগী দেখতে গিয়েছো? আবু বকর হাত তুলেছেন।
যখন একটি হাদিস সংগ্রহ করতে অনেক ক্ষেত্রে মাইলের পর মাইল সফর করতে হতো—এরোপ্লেনে নয়, গাধা-খচ্চরে চড়ে—তখন ইমাম আহমাদ তার মুসনাদে কম-বেশ ত্রিশ হাজার হাদিস সংগ্রহ করেছেন। ইমাম বুখারি সাত হাজার পাঁচশত হাদিস সংকলন করেছেন শুধু সহিহ বুখারিতে। প্রতিটি হাদিস লিপিবদ্ধ করার পূর্বে তিনি দুই রাকাআত সালাতও আদায় করেছেন।
ইমাম আবু হানিফা, শাফিঈ, মালিক (র.) প্রমূখ বিশেষজ্ঞগণ যে অবদান রেখেছেন ইতিহাস তার সাক্ষী। পাখির পালক কালিতে চুবিয়ে লেখার যুগে ইমাম ইবনে তাইমিয়ার করা রচনাগুলো আমাদের অনেকে এক জীবনে হয়তো পড়েও শেষ করতে পারব না।
তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের সব কাজ সহজ করে দিয়েছে। ক্লিকেই দুনিয়ার তথ্য আমাদের নখের ডগায়। আমরা পৃথিবীর এক প্রান্তে প্রাতরাশ সেরে অন্য প্রান্তে দুপুরের কাইলুলা করতে পারি। এত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেও পূর্বসূরীদের মতো যোগ্য সন্তান জন্ম দিতে এই জাতি আজ ব্যর্থ। সকাল হয়, দিন গড়িয়ে রাত হয়, আবার সূর্য ওঠে। আলু-পেঁয়াজ আর বিদ্যুৎ বিলের হিসাব মেটাতেই বেলা শেষ। পৃথিবীকে দিয়ে যাওয়ার মতো কিছুই করা হয় না। সময় নেই, ব্যস্ত।
আমরা কি আসলেই ব্যস্ত—নাকি ব্যস্ততার অভিনয় করি, নিজেকে কিছু একটা প্রমাণিতে?
তথ্যপ্রযুক্তির অক্টোপাসে জড়ানো আধুনিক এই সময়ে জীবনটাকে আরেকটু যারা অর্থবহ করতে চান; পৃথিবীতে রেখে যাওয়ার মতো কিছু করতে চান তাদের জন্য সিয়ানের বই “Time Management” বাংলা অনূদিত হয়ে এসেছে “টাইম ম্যানেজমেন্ট” নামে।
একেবারে সহজ সরল সমীকরণে বইটি লিখেছেন ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটির হেড টিউটরিয়াল এসিসট্যান্ট উস্তাদ ইসমাইল কামদার।
Reviews
There are no reviews yet.